মনিবের চরণে ভৃত্যের নিবেদন
🖋️ আল্লামা বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর (ম.জি.আ)।
আজ ২১ রমদ্বান! ৪০ হিজরীর এ দিনেই মওলা আলী মুশকিল কুশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু শাহদাত বরণ করেন। তাঁর মস্তকে মালউন আব্দুর রহমান ইবনে মুলজিম চুরিকাঘাত করে ১৯ রমদ্বান জুমু’আহ’র দিন ফজরের নামাযে গমনকালে মসজিদের ভিতরেই। আঘাত কপাল ও মস্তক মুবারকের খুলি ভেদ করে মগজ পর্যন্ত পৌঁছে, তিনি ২১ রমদ্বান শনিবার দিবাগত রবিবার রাতে শাহাদত বরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন।
রঈসুল মুফাসসিরীন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বি.)’র সূত্রে ইবনি আসাকির বর্ণনা করেন, “তাঁর শানে কুরআনের আটশত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে”। ৮০০ দিয়ে কুরআনের মোট আয়াতকে ভাগ করলে দেখা যায় প্রায় এক অষ্টমাংশই মওলা-ই কায়িনাত রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর শান। এর পরও কিছু শিয়া এ কুরআন নিয়ে কেন ফিসফাস করে আমার মাথায় ধরেনা!
আবার কিছু তথাকথিত সুন্নী তাঁর শানের হাদীস গুলোকে নির্বিচারে জাল বলে ওড়িয়ে দিতে চায় কেন, বুঝিনা!
হুব্বে আলী যেমন বুগদ্বে সাহাবাহ’র নাম নয়,তেমনি হুব্বে সাহাবাহও বুগদ্বে আলী হতে পারেনা!
তিনিতো ওই সত্তা যিনি আল্লাহ ও রাসূলকে ভালবাসেন এবং আল্লাহ ও রাসূলও তাঁকে ভালবাসেন।
ইমাম বুখারী ও মুসলিম সাহল বিন সা’দ থেকে বর্ণনা করেন, “নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খায়বর দিবসে ইরশাদ করেন, আগামি কাল এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দেব, যার হাতে আল্লাহ বিজয় দেবেন, যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলও তাঁকে ভালবাসেন। পতাকা কাকে দিচ্ছেন,কে সে সৌভাগ্যবান? সে ভাবনায় সকল সাহাবাহর রাত বড় অস্থিরতায় কাটল। সকাল হতেই সবাই নবী করীম (ﷺ)’ র খেদমতে উপস্থিত হয়ে গেলেন, সকলের প্রত্যাশা ছিল যে, পতাকা তাকে দেওয়া হোক। (যেহেতু সবাই আল্লাহ ও রাসূল প্রেমে উৎসর্গপ্রাণ)। নবী করীম (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেন, আলী কোথায়? বলা হল তাঁর চোখে অসুখ করেছে। নবী (ﷺ) বললেন, লোক পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে নিয়ে এস। তাঁকে ডেকে আনা হলে রাসূলে আকরম (ﷺ) তাঁর দু’চোখে থুথু মুবারক দিলেন এবং তাঁর জন্য দু’আ করলেন; এতে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন, যেন চোখে কোন রোগই ছিলনা। অতঃপর তাঁর হাতে পতাকা দিলেন”। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়,তাঁর হাতেই খায়বর বিজয় হয়। মওলা আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর শানের এ হাদীস বর্ণনাকারী ইমাম বুখারী (রা.) ও শিয়াদের আক্রমণ থেকে রেহাই পেলনা!!!
“ফরিয়াদ বজনাবে মওলা-ইকায়িনাত”
ডাকি মওলা আকূল প্রাণে,
এসো আমার হৃদাসনে,
মনিব হয়ে শুননা ক্যানে,
ভৃত্যের এ করুণ ক্রন্দন?
দাসের ধর্ম পাপ করা,
মনিবের কর্ম মাফ করা,
ক্ষমা করে সব দোষ,
ঠাঁই দাও নূরী চরণ।
দেখিতে তব আনন,
মন আমার উচাটন,
হেরাই ইবাদতে গণন,
হাদীসের যে সুবর্ণন।
জ্ঞান-নগর-দ্বার তুমি,
সে দ্বারে ভিখারি আমি,
দয়া দানে ধন্য কর,
পূর্ণ কর আকিঞ্চন।
যদিও অধম ভৃত্য আমি,
মহত্তম মওলা তুমি,
তব কৃপায় মুক্তি পাব,
শেষবিচারের কঠিন ক্ষণ।