জাগো মুসলিম জাগো!

লেখকঃ বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর

জনাব! জ্ঞাতে অজ্ঞাতে ইসলাম বিদ্বেষী শক্তির ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হচ্ছেননাতো?

Memoirs of Mr. Hempher, The British Spy to the Middle East or Confessions of a British Spy (Urdu:Humfhrey’s memories) এর তথ্যগুলো মুসলিমদের স্মৃতি থেকে এত শীঘ্রই মুছে গেলনাতো?

ইবনে আব্দিল ওহাবের আহলে হক্ব উলামায়ে কিরামদের মুবাহুদ্দম ঘোষণার সূত্র কি সবাই বেমালুম ভুলে গেছে?

মাযার পূজারী’ অভিযোগ ব্রিটিশ ষড়যন্ত্রের অংশ ইবনে আব্দিল ওহাবও (১৭০৩-১৭৯২ খ্রি.) তুলেছিল মাইজভাণ্ডারী ত্বরীক্বাহ’র উদ্ভব পূর্বে; ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চারা তা কি জানে?

আদম আলায়হিস্ সালামকে সিজদার কারণে ফিরাশতাদের মানুষ পূজারী, ইউসুফকে সিজদার কারণে ইয়াকুব ও তাঁর স্ত্রী পুত্রকে নবী বা বাদশাহ পূজারী, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামার ক্ববর শরীফে (واضعا وجهه) চেহারা স্থাপক বলে আবূ আইয়ুব আনসারীকে মাযার পূজারী বলা যাবে কি?

নাঊযু বিল্লাহ, ছুম্মা নাঊযু বিল্লাহ!

তবে একই কর্মের দায়ে মাইজভাণ্ডারীদের ভন্ড/ মাযার পূজারী বলা হবে কেন?

আবূ আইয়ুব আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও মারওয়ানের মতানৈক্যে কার আমল অনুসরণ যোগ্য?

বনী আব্দিল ওহাবরা-তো বরাবরই গদির স্বপ্ন দেখে আসছে, এবার তাদের হয়ে ছাগলের তিন নাম্বার ছানারাও সে খোয়াব দেখছেনাতো?

সিজদায়ে তাহিয়্যাহ’র বৈধ-অবৈধের মতানৈক্য স্বয়ং মুজাদ্দিদে আলফে ছানী স্বীকৃত। তাঁর ৯২ নাম্বার মাকতূব হতে চয়িত, নিম্নে উদ্ধৃত অংশ একটু ভালো করে দেখুন, পড়ুন ও বুঝুন। আমার অনুবাদের ওপর আস্থা না থাকলে আপনাদের বিশ্বস্ত যে কোন সুন্নী আলিমকে জিজ্ঞাসা করুন।

بعضے از فقہاء ہر چند سجدۂ تحیت بسلاطین تجویز نمودہ آند اما لائق حال سلاطین عظام آنست کہ دریں امر بحضرت حق سبحانہ وتعالیٰ تواضع نمایند

অর্থাৎ কতেক ফুক্বাহা সম্রাটদের জন্য সিজদায়ে তাহিয়্যাহ যতইনা অনুমোদিত রায় দেন, পরন্তু সম্মানিত সুলত্বানদের অবস্থার সাথে শোভনীয় যে, এ বিষয়ে আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সমীপে বিনয় দেখাবেন।

উক্ত তথ্যালোকে স্পষ্ট যে, মুজাদ্দিদ আলাইহির রহমাহ’র পূর্ববর্তী সময়েও বৈধতার প্রবক্তা ফুক্বাহায়ে কিরাম বিদ্যমান ছিলেন। এখন কোন মুজাদ্দিদীর ইখতিলাফ (মতানৈক্য) অস্বীকার করা হয়তো মূর্খতা, নয়তো ধর্মাঙ্গনে ফিৎনার উম্মাদনা।

#সিজদায়ে তাহিয়্যাহ’র বৈধতার প্রবক্তা কেবলমাত্র সুলত্বানুল উলমা ওয়াল ফুক্বাহা শায়খুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন সায়্যিদুনা আমীনুল হক্ব ওয়াদ্দীন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু নন; তা মাকতূবাতের উদ্ধৃতি মর্মে সুস্পষ্ট। এখানে আরো একটি রেফারেন্স উদ্ধৃত হল,

كيف وقد قال به سلطان الاولياء سيدنا نظام الحق والدين رضى الله تعالىٰ عنه واستدل بانه كان واجبا للامر ثم نسخ الوجوب فبقى الندوب-

یہ کیسے ہو سکتا ہے کہ جبکہ سلطان الاولیاء سیدنا نظام الحق والدین رضی اللہ تعالیٰ عنہ نے اس کے بارے میں فرمایا اور اس بات پر استدلال کیا کہ سجدہ صیغۂ امر کی وجہ سے پہلے واجب تھا پھر وجوب منسوخ ہو گیا تو استحباب باقی رہ گیا-

“এটা কি করে হতে পারে যে, যখন সুলত্বানুল আওলিয়া নিযামুল হক্ব ওয়াদ্দীন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এ বিষয়ে বলেছেন এবং দলীল উপস্থাপন করেছেন যে, সিজদা আমর বা নির্দেশ সূচক শব্দের কারণে প্রথমে ওয়াজিব ছিল, ফের ওজূব রহিত হয়ে গেল তো ইস্তিহবাব অবশিষ্ট রয়ে গেল” ফতোয়ায়ে রদ্বভীয়্যাহ্, ২২ খণ্ড, ৫৫৯ পৃষ্ঠা, রেদ্বা ফাউন্ডেশন জামে’ নিযামিয়্যাহ রদ্বভীয়্যাহ্।

এতে স্পষ্ট যে, নিযামুদ্দীন মাহবূবে ইলাহী সিজদায়ে তাহিয়্যাহ্’র ইস্তিহ্বাবের প্রবক্তা।

গাযীয়ে মিল্লাত ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা সায়্যিদ আযীযুল হক্ব্ শেরেবাংলা রহমতুল্লাহি আলাইহির দীওয়ানে আযীযের উদ্ধৃতিও একটু পর্যবেক্ষণ করুন,

حکم سجدۂ تحیہ ہم بداں، اختلاف عالماں بس اندر آں –

অর্থাৎ “সিজদায়ে তাহিয়্যাহ বা অভিবাদন প্রণতির বিধানও জেনে নাও,ওটাতে আলিমদের বেশ মতানৈক্য রয়েছে।”

সিজদায়ে তাহিয়্যাহ্’র মাসয়ালাটি যুগ যুগ ধরে মতানৈক্য বিশিষ্ট মাসয়ালা রূপে স্বীকৃত। উভয়পক্ষের মুহাক্ব্ক্বিক্ব উলামায়ে কিরামের কেউ কারো প্রতি অশালীন মন্তব্য কিংবা কটাক্ষ কটুক্তি করার পূর্ব নজির নেই। ওপরের উদ্ধৃতিগুলোতে মনোযোগ দিলে তাঁদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হবেন। মুজাদ্দিদে আলফে ছানী ‘ফুক্বাহা’ বলে অভিহিত করেছেন; ফাযিলে ব্রেলীতো ‘সুলত্বানুল আওলিয়া ও সায়্যিদুনা’ শব্দযোগে উল্লেখ করেছেন; শেরেবাংলাও ‘আলিমাঁ’ আখ্যায়িত করেছেন। আকাবিরদের পথ হতে স্খলিত এরা কারা, যারা কটাক্ষ কটুক্তি করছে? এদের চিনতে ভুল করলে চরম মূল্য দিতে হতে পারে।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *