০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

মাইজভাণ্ডারী গান

  • মুক্তিধারা
  • Update Time : ১১:৪৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১৭১ Time View
মাইজভাণ্ডারী গান
(গবেষক মহোদয়গণ ও প্রকাশক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ)
✍️ বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর
মাইজভাণ্ডারী গান অবিকৃত অবস্থায় সাধারণের নাগালে পৌঁছানো প্রকাশনার অন্যতম উদ্দেশ্য; এই যায়গায় গণ্ডগোল হলে বাকি সবটা যায় রসাতলে। বিকৃতি অনবধানতায় হোক বা অন্য কোন কারণে হোক; বিকৃতি তো বিকৃতিই। বিকৃত রূপ সর্বসাধারণের মুখে মুখে চর্চিত হয়ে গেলে ঠেকানোর পথ থাকবে না। এতে পাঠক যেমন ভুল দিশা পাবে, তেমনি গীতিকারের যোগ্যতা হবে প্রশ্নবিদ্ধ। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পরিশুদ্ধ সংস্করণ প্রকাশ যতটা জরুরি, তারচেয়েও বেশি প্রয়োজন অশুদ্ধ কপির প্রত্যাহার। আশা করি এই অপূরণীয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে অর্থনৈতিক লোকসান প্রতিবন্ধক হবে না।
ক্ষতির ভয়াবহতা মূল্যায়নের সুবিধার্থে আমরা মাইজভাণ্ডারী গানের আদি গীতিকার আল্লামা সৈয়দ আব্দুল হাদী কাঞ্চনপুরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র রত্ন সাগর গীতিগ্রন্থের ৮ নাম্বার গীতির দু’টি চরণ তুলে ধরছি।
جب کہ تولے عملے ہرایک شخص کو میزان میں،
میں بھی رکھ دونگا دل گھائل کو بسوز عالم –
জব কেঃ তোলে আমলে হার এক শাখ্ছ কো মীযান ম্যাঁ,
ম্যায়ঁ ভী রাখ দওঙ্গা দিলে ঘায়েল কো ব-সূযে আলম।
যখন প্রত্যেক ব্যক্তির আমল মীযান বা পাল্লায় ওজন করা হবে,
আমিও জগতের মর্মপীড়াসহ আহত অন্তর রেখে দিব।
পরিমার্জিত সংস্করণে “রাখ্ দওঙ্গা” এর স্থলে “রোখ দোওঙ্গা” এবং অনুবাদে “আমি বাঁধা দেব” কথটার ভয়াবহতা একবার ভাবুন! 
আরবী – ফার্সী – উর্দূর বাংলা উচ্চারণে আপনি যতই নিখুঁত প্রতিবর্ণ চয়ন করুন না কেন, পাঠক যদি মূলভাষা অজ্ঞাত হন, তবে সঠিক উচ্চারণ তার পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলায় سص উভয়ের প্রতিবর্ণ রূপে ‘স’ ব্যবহার করা হয়; অথচ এ দু’টির উচ্চারণে ব্যবধান বিশাল। মাইজভাণ্ডারী গানের শুরুর দিকের গীতিকারদের আমলে ع এর উচ্চারণ  (ও) আর س এর উচ্চারণ (শ) দিয়ে লেখা হতো; ওরশ শব্দে মনোযোগ দিলে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এখন শব্দটি উরস না লিখে ওভাবে লেখা হলে ع এর পরিবর্তে و আর س এর পরিবর্তে ش পড়বে তরুণ প্রজন্ম।  সুতরাং লেখকের বানান রীতি অবিকৃত রেখে মাইজভাণ্ডারী গানকে বিকৃতি থেকে রক্ষার তাগিদে টীকায় বর্তমান বানান রীতিতে উচ্চারণ কিংবা আরবী, ফার্সী ও উর্দূ শব্দ ওই ভাষার বর্ণমালায় প্রকাশ জরুরি। জানি কাজটি কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। শ্রম সাশ্রয়ের চিন্তা থেকে বর্তমান বানান রীতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
পুরো পুস্তক পাঠান্তে রিভিউ লেখা কিংবা সংশ্লিষ্ট মহলের সাথে সরাসরি আলোচনার সময় ও সুযোগ আমার হাতে নেই বিধায় এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আশা করি সবাই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

মাইজভাণ্ডারী গান

Update Time : ১১:৪৩:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
মাইজভাণ্ডারী গান
(গবেষক মহোদয়গণ ও প্রকাশক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ)
✍️ বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর
মাইজভাণ্ডারী গান অবিকৃত অবস্থায় সাধারণের নাগালে পৌঁছানো প্রকাশনার অন্যতম উদ্দেশ্য; এই যায়গায় গণ্ডগোল হলে বাকি সবটা যায় রসাতলে। বিকৃতি অনবধানতায় হোক বা অন্য কোন কারণে হোক; বিকৃতি তো বিকৃতিই। বিকৃত রূপ সর্বসাধারণের মুখে মুখে চর্চিত হয়ে গেলে ঠেকানোর পথ থাকবে না। এতে পাঠক যেমন ভুল দিশা পাবে, তেমনি গীতিকারের যোগ্যতা হবে প্রশ্নবিদ্ধ। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পরিশুদ্ধ সংস্করণ প্রকাশ যতটা জরুরি, তারচেয়েও বেশি প্রয়োজন অশুদ্ধ কপির প্রত্যাহার। আশা করি এই অপূরণীয় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে অর্থনৈতিক লোকসান প্রতিবন্ধক হবে না।
ক্ষতির ভয়াবহতা মূল্যায়নের সুবিধার্থে আমরা মাইজভাণ্ডারী গানের আদি গীতিকার আল্লামা সৈয়দ আব্দুল হাদী কাঞ্চনপুরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু’র রত্ন সাগর গীতিগ্রন্থের ৮ নাম্বার গীতির দু’টি চরণ তুলে ধরছি।
جب کہ تولے عملے ہرایک شخص کو میزان میں،
میں بھی رکھ دونگا دل گھائل کو بسوز عالم –
জব কেঃ তোলে আমলে হার এক শাখ্ছ কো মীযান ম্যাঁ,
ম্যায়ঁ ভী রাখ দওঙ্গা দিলে ঘায়েল কো ব-সূযে আলম।
যখন প্রত্যেক ব্যক্তির আমল মীযান বা পাল্লায় ওজন করা হবে,
আমিও জগতের মর্মপীড়াসহ আহত অন্তর রেখে দিব।
পরিমার্জিত সংস্করণে “রাখ্ দওঙ্গা” এর স্থলে “রোখ দোওঙ্গা” এবং অনুবাদে “আমি বাঁধা দেব” কথটার ভয়াবহতা একবার ভাবুন! 
আরবী – ফার্সী – উর্দূর বাংলা উচ্চারণে আপনি যতই নিখুঁত প্রতিবর্ণ চয়ন করুন না কেন, পাঠক যদি মূলভাষা অজ্ঞাত হন, তবে সঠিক উচ্চারণ তার পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলায় سص উভয়ের প্রতিবর্ণ রূপে ‘স’ ব্যবহার করা হয়; অথচ এ দু’টির উচ্চারণে ব্যবধান বিশাল। মাইজভাণ্ডারী গানের শুরুর দিকের গীতিকারদের আমলে ع এর উচ্চারণ  (ও) আর س এর উচ্চারণ (শ) দিয়ে লেখা হতো; ওরশ শব্দে মনোযোগ দিলে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এখন শব্দটি উরস না লিখে ওভাবে লেখা হলে ع এর পরিবর্তে و আর س এর পরিবর্তে ش পড়বে তরুণ প্রজন্ম।  সুতরাং লেখকের বানান রীতি অবিকৃত রেখে মাইজভাণ্ডারী গানকে বিকৃতি থেকে রক্ষার তাগিদে টীকায় বর্তমান বানান রীতিতে উচ্চারণ কিংবা আরবী, ফার্সী ও উর্দূ শব্দ ওই ভাষার বর্ণমালায় প্রকাশ জরুরি। জানি কাজটি কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। শ্রম সাশ্রয়ের চিন্তা থেকে বর্তমান বানান রীতি অনুসরণ করা যেতে পারে।
পুরো পুস্তক পাঠান্তে রিভিউ লেখা কিংবা সংশ্লিষ্ট মহলের সাথে সরাসরি আলোচনার সময় ও সুযোগ আমার হাতে নেই বিধায় এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আশা করি সবাই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখবেন।