হাদীয়ে যমান গাউসুল ওয়াক্ত কাযী সৈয়্যদ হারূনুর রশীদ কুদ্দিসা সিররুহু।

হারুয়ালছড়ি দরবার শরীফ

আল্লামা মাওলানা মুফতি  এস. এম. জাফর ছাদকে আল আহাদী (ম.)

 

আউলিয়া চরিত থেকে আমাদেরকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয় বিধায় তাঁদের জীবনী আলোচনা-পর্যালোচনা আমাদের জন্য জরুরী হয়ে পড়ে। হাদী-এ যমান, গাউসুল ওয়াক্ত, হযরতুল আল্লামা শাহসূফী মাওলানা কাযী সৈয়্যদ হারূনুর রশীদ কুদ্দিসা সিররুহু হন একজন উচ্চস্তরের কামিল-মুকাম্মিল ওলীয়ুল্লাহ। হযরত গাউসুল আ’যম মাইজভাণ্ডারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ত্বরীকা-দর্শনালোকে আলোকিত ও ধারাবাহিক বিকশিত অসংখ্য ওলীয়ে কামিলীন-মুকাম্মিলীনের অন্তর্গত তিনি এক সমুজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। হযরত গাউসুল আ’যম মাইজভাণ্ডারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বিশিষ্ট খলীফা গাউসে যমান, পেশোয়ায়ে ফাযিলাঁ, তাজে ফখরে আরিফাঁ, রুকনে আ’যমে সুন্নিয়াঁ, শায়খুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন হযরতুল আল্লামা সৈয়্যদ আমীনুল হক ফরহাদাবাদী কুদ্দিসা সিররুহুর তিনি খাতিমুল খোলাফার বৈশিষ্ট্যে মহিমান্বিত খলীফা হন। ধর্ম, দর্শন, ত্বরীক্বা, মানবতা ও সৃজনশীলতা ইত্যাদির শিক্ষা-দীক্ষা দানে তাঁকে এক সুবৃহতাঙ্গিক বহুমুখী প্রতিষ্ঠান রূপেই পরিলক্ষিত হয়। তাঁর বিশালতার কিয়দাংশ এখানে সংক্ষেপে আলোচনার প্রয়াস পাচ্ছি।

শুভ জন্ম

২৭ আগষ্ট ১৯২৩ খ্রীষ্টাব্দ, ১০ ভাদ্র ১৩৩০ বাংলা, ১৪ মুহররম ১৩৪২ হিজরী সোমবার এক শুভ লগ্নে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গৌরবান্বিত আব্বাজান হন হযরত কাযী সৈয়্যদ আশরফ আলী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং আম্মাজান সৈয়্যদা সা‘আদিয়া বিবি আনোয়ারা বেগম রহমাতুল্লাহ্ আলাইহা। তাঁর পূর্বপুরুষগণ সৈয়্যদ বংশীয় হওয়ার পাশাপাশি তৎকালে বিচার কার্যে নিয়োজিত নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

শিক্ষা-দীক্ষা সহ বিলায়ত ও কমালিয়ত অর্জন

প্রাথমিক শিক্ষা পারিবারিকভাবে শুরু হয়ে মক্তবে সম্পন্ন হয়। অতঃপর অধিক শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে তিনি কৈশোর কালেই বাসস্থান ত্যাগ করে প্রথমে সিতাকুণ্ড মাদ্রাসায় এবং তথা হতে হযরত শায়খুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন আল্লামা ফরহাদাবাদীর সান্নিধ্যে গমন করতঃ দরসে নেজামীয়া ভিত্তিক বিবিধ বিষয়ে গভীর জ্ঞানার্জনে ব্রতী হন। আল্লামা ফরহাদাবাদীর সান্নিধ্যে তিনি জাহেরী জ্ঞানের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক গভীর জ্ঞানও অর্জন করেন এবং ত্বরীক্বতের বাই‘আত গ্রহণ পূর্বক সুযোগ্য খলীফা সাব্যস্ত হন।

এক পর্যায়ে তিনি কুত্ববুল আক্বতাব বাবাভাণ্ডারী কুদ্দিসা সিররুহুর আধ্যাত্মিক নির্দেশনায় আজমীর শরীফ গমন করেন এবং তথায় ওসমানীয়া মুঈনীয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়নের পাশাপাশি কঠোর রিয়াযতে ব্রতী হন। এ ব্রতের সাফল্য অর্জন করতঃ তিনি পুনরায় ফরহাদাবাদ দরবার শরীফে ফিরে আসেন।

অতঃপর আধ্যাত্মিক আরো ফুয়ূযাত লাভে আগ্রহী এ মহাপুরুষ ছুটে গেলেন খোলাফায়ে গাউসুল আ’যম মাইজভাণ্ডারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার মধ্যে তখনও ইহলোকে বিদ্যমান হযরতুল আল্লামা শাহসূফী মাওলানা সৈয়্যদ আবদুসসালাম ভূজপুরী কুদ্দিসা সিররুহুর নিকট। তিনি তখন কিতাবের ছোট্ট একটি থলে সাথে নিয়ে কোথায় যেন যাবার জন্য প্রস্তুত। পৌঁছামাত্র তাহিয়্যাহ অভিবাদন বিনিময় শেষ হতেই উভয়ে একই গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হয়ে গেলেন। পথিমধ্যে যথারীতি আদব রক্ষায় কিতাবের থলেটি বহন করে নিতে চাইলে পারবে নাকি প্রশ্নোত্তর শেষে তাঁকে দিলেন। কিতাবের ছোট্ট থলেটি প্রথমে খুব হালকাই মনে হলো, কিন্তু কিছুদুর যাবার পর এটি ভারী থেকে ভারীতর হতে লাগলো। এক পর্যায়ে এটি বহন করতে তাঁর সমস্ত শিরা উপশিরা ফুলেই উঠেছে; এমনতর ভারী হয়ে পড়লো। তখন তিনি সচেতন হয়ে দৃঢ়চিত্তে সংকল্প নিলেন যে, এটি যতই ভারী হোকনা কেন, কোথাও কালক্ষেপণ না করে গন্তব্যে পৌঁছিয়ে দেবেনই। এ হেন সংকল্প নেওয়ার মুহূর্তকাল পর এটি আর ভারী বোধ হচ্ছেনা, ঠিক আগের মতো হালকাই মনে হচ্ছে এবং সেই সাথে গন্তব্যেও এসে পড়েছেন; এক মুরীদের বাড়িতে। পৌঁছামাত্র তাঁকে এ বলে বিদায় দিলেন যে, ‘তোমার এখানে আর কাজ নেই, ফরহাদাবাদই চলে যাও’। অত্যন্ত ঘর্মাক্ত অবস্থায় এভাবে বিদায় দিতে দেখে গৃহকর্তা মুরীদটি কিছু মুখে দিয়ে বিশ্রামের জন্য সুপারিশ করলে তিনি বললেন- ‘এ ছোট্ট ছেলেটির ভিতর মাওলা মাইজভাণ্ডারী কি সীমাহীন খেলাই যে খেলছেন!’

এ দিকে দরসে নেজামীয়া ভিত্তিক জাহেরী শিক্ষার্জনে তাঁর আরেকজন শিক্ষক ছিলেন মির্জাপুর নিবাসী মুফতী রশীদ আহমদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তাঁর সান্নিধ্যে কিছুকাল অতিবাহিত করে বিদায় লগ্নে তিনি অকপটে স্বীকৃতি দিলেন যে, জ্ঞানার্জনে আমার দ্বারা তুমি নও বরং তোমার দ্বারা আমিই বেশী উপকৃত হলাম।

দরসে নেজামীয়া ভিত্তিতে প্রায় প্রতি বিষয়ে পারদর্শীতা লাভ সত্ত্বেও তিনি সনদ বিহীন অবস্থায় থাকাটা যথোচিত মনে করেননি। তাই ইষ্ট বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন বোর্ডের অধীনে ১৯৫৩ খ্রীষ্টাব্দে আলিম এবং ১৯৫৫ সনে ফাযিল পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে সনদও লাভ করেন।

সাংসারিক জীবন:

আল্লাহ তা‘আলার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল থেকে পার্থিব বিষয় সম্পদের প্রতি নির্মোহ অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করে আসছিলেন তিনি শৈশব থেকেই। যদিও তাঁর উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষগণ বিপুল ভূ-সম্পদের অধিকারী জমিদার শ্রেণীভুক্ত হওয়ার সুবাদে তাঁর শ্রদ্ধেয় আব্বাজানের সম্পদ এবং পরবর্তীতে নিজ পৈতৃক সম্পদ যথেষ্টই ছিল। ১৪ জুলাই ১৯৫৭ খ্রীষ্টাব্দে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুন্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা পালন করলেও বিষয়-সম্পদের মোহ তাঁকে আবদ্ধ করতে পারেনি। তাই পৈতৃক জমিতে চাষাবাদের তোয়াক্কা না করে শিক্ষা-দীক্ষা দান ও হিদায়ত কার্য আঞ্জাম দেওয়ার ক্ষেত্রেই নিজকে নিয়োজিত রাখেন। এতেকরে তিনি সহ তাঁর পরিবারকে কখনো কখনো পার্থিব সমস্যাসংকুল অবস্থা অতিক্রম করতে হলেও ধৈর্যচ্যুতি ঘটার চিহ্নমাত্রও পরিলক্ষিত হয়নি। মহান রব্বুল আলামীনের লীলায় ওইসব সমস্যাসংকুল অবস্থা অলৌকিক ভাবে কেটে যেতেও দেখা গিয়েছে। তাঁর ঔরসজাত ১০ সন্তানের প্রত্যেককেই তিনি ধর্মীয় উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলেন।

 

কর্ম  জীবন:

শিক্ষা-দীক্ষা দান, হিদায়ত কার্য আঞ্জাম দেওয়া এবং ত্বরীক্বতের খিদমতে তিনি আজীবন নিজকে ব্যস্ত রাখেন। দরসে নেজামীয়া ভিত্তিক শিক্ষা দান ছাড়াও তিনি ওদুদিয়া মাদ্রাসা, গহিরা মাদ্রাসা, নাঙ্গলমোড়া মাদ্রাসা প্রভৃতি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি হিদায়তকার্য আঞ্জাম এবং ত্বরীকতের দীক্ষাও দিয়ে যান সমান ভাবে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা‘আত এবং মাইজভাণ্ডারী ত্বরীকার বিরোধীতাকারীদের মোকাবিলায় বহু মুনাযিরাহও করেছেন তিনি পূর্ণাঙ্গ সফলতার সাথে।

একজন বাল্য শিক্ষকের জোর অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে ১৯৭০ সালে এসে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন বেশ কিছু দিন। অতঃপর এলাকায় বাতিল পন্থীদের প্রাদূর্ভাব দেখে তাদের মোকাবিলায় সফল মুনাযিরাহ’র পাশাপাশি ১৯৭৮ সালে ঐতিহ্যবাহী গাউসিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা‘আতকে শক্তিশালী করে তুলেন। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ততার এক পর্যায়ে পার্থিব অর্থ-বিত্তের প্রতি আজীবন নির্মোহ এ ব্যক্তিত্ব সরকারী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মতো বিশাল সুযোগ-সুবিধাযুক্ত চাকুরীও স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেন শতজনের শত অনুরোধ সত্ত্বেও।

শরীয়তের পাশাপাশি আধ্যাত্মিক ত্বরীক্বা-দর্শন ও আদর্শে মানব সমাজকে শক্তিশালী করে তোলার প্রয়াসে আঞ্জুমানে তৌহীদ বতোফায়লে রশীদ’র মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনও প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৮৩ সালে। ফলে আলোকিত বহু মানব সন্তান ওইসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অব্যাহত ধারায় সৃষ্টি হয় এবং আর্তমানবতার সেবা-সাহায্যও হচ্ছে।

বিশিষ্টজনা থেকে শুরু করে সর্বসাধারণের নিকট হিদায়তের বাণী পৌঁছানোর প্রয়াসে সপ্তাহিক, মাসিক, বাৎসরিক ও নৈমিত্তিক বিবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন ও প্রচলন করেন। মহান ১২ রবিউল আওয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্মারক আলোচনা মাহফিল, ১০ মুহররম শাহাদাতে কারবালা শীর্ষক আলোচনা মাহফিল, ১১ রবিউসসানি হযরত গাউসুল আ’যম জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর উরস শরীফ শীর্ষক আলোচনা মাহফিল, ৮ মাঘ হযরত গাউসুল আ’যম মাইজভাণ্ডারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর উরস শরীফ স্মারক আলোচনা-যিকর ও সেমা মাহফিল, ২১ চৈত্র কুত্ববুল আক্বতাব বাবাভাণ্ডারী কুদ্দিসা সিররুহুর উরস শরীফ স্মারক যিকর ও সেমা মাহফিল, ২৬ অগ্রহায়ণ গাউসে যমান আল্লামা ফরহাদাবাদী কুদ্দিসা সিররুহুর উরস শরীফ স্মারক মিলাদ, যিকর ও সেমা মাহফিল, প্রতি বাংলা মাসের ১০ তারিখ (বর্তমানে ১১ রজব স্মরণে প্রতি চাঁদের ১১ তারিখ) মাসিক মাহফিল, প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে সাপ্তাহিক মাহফিল এবং সময়ে সময়ে এলাকা ভিত্তিক নৈমিত্তিক ওয়ায-নসিহত যিকর ও সেমা মাহফিল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা‘আত কিংবা ত্বরীক্বত বিরোধীদের মোকাবিলায় সর্বদা অপ্রতিদ্ধন্দ্বী ও সফল মুনাযির হিসেবে এবং বেলায়তী প্রভাব দ্বারাও তাঁর হিদায়তের দীপ্তালোক বিভিন্ন দূর এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত।

কারামাত:

বর্ণিত আছে যে, ‘আল্ ইসতিক্বামাতু ফাউক্বাল কিরামাত’ অর্থাৎ ‘কারামত প্রকাশ না করে স্থির থাকতে চাওয়াটা কারামত থেকে উর্ধ্বেরই বৈশিষ্ট্য।’ তিনি এরূপ বৈশিষ্ট্যেরই ওলী-এ কামিল-মুকাম্মিল হন। এতদসত্ত্বে তাঁর থেকে বহু কারামত আল্লাহর মর্জিতে প্রকাশ হয়ে পড়ে; তা হতে অংশ বিশেষ নিম্নরূপ:

(১) অন্তরের কল্পনাদি সম্পর্কে অবগতি, (২) দূরবর্তী আলাপচারিতা ও কার্যকলাপ সম্পর্কে অবগতি, (৩) অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি, (৪) নিঃসন্তানের সন্তান লাভ, (৫) পুত্র সন্তান প্রার্থীকে পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিয়ে জন্মের পূর্বেই ছেলের নাম নির্ধারণ, (৬) দরবারে আসার পথে হযরত বাবাজান ক্বিবলার জ্ঞান সম্পর্কে তাচ্ছিল্যকারী এক বিশিষ্ট আলেমকে ধারণাকৃত সব প্রশ্নের উত্তর নিজ থেকে দিয়েই একটিমাত্র প্রশ্নে স্তব্ধ করে দেওয়া, (৭) আপন মুরশিদ ক্বিবলার রওযা শরীফের দরজাস্থ বদ্ধ বৃহৎ তালা বিনা চাবিতে স্পর্শ মাত্রই খোলে যাওয়া, (৮) সচরাচর ভাবে হজ্বে না যাওয়া সত্ত্বেও হজ্বব্রত পালনরত অবস্থায় দেখতে পাওয়া, (৯) বাসগৃহে শত্রু কর্তৃক অগোচরে ছয়বার অগ্নি সংযোগ অগোচরেই নিবে যাওয়া এবং মেরামত কালে তা দৃষ্ট হওয়া, (১০) পাগলা মহিষ শান্ত হয়ে সিজদা করা, (১১) যবেহের প্রাক্কালে চরম মত্ত মহিষকে ডাক দেওয়া মাত্র স্বেচ্ছায় শুয়ে পড়ে যবেহের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাওয়া, (১২) বিপদগ্রস্ত অবস্থায় তাঁকে স্মরণ করে বিপদ মুক্তি, (১৩) বাড়িতে অবস্থান করা সত্ত্বেও অন্যত্র দেখতে পাওয়া, (১৪) প্লাবনের তোড়ে তলিয়ে যাওয়ার অবস্থায় তাঁকে স্মরণ করা মাত্র হঠাৎ ভেসে ওঠে বিনা চেষ্টায় উজান দিকে এসে কূলে ওঠা, (১৫) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃতকে পুনর্জীবিত করা, (১৬) পানিতে ডুবা মৃতকে পুনর্জীবিত করা, (১৭) হাদিয়া দেওয়ার নিয়ত করায় নিষ্ফলা বৃক্ষে ফল ধরা, (১৮) হাদিয়া দেবে নিয়ত করায় বন্য পশুর অনিষ্টতা থেকে ফসল রক্ষা পাওয়া, (১৯) হাদিয়া নিয়ত করায় কীট পতঙ্গের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পাওয়া, (২০) আসর শেষে এক দণ্ড বেলা বাকি থাকতে রওয়ানা দিয়ে বিপদসংকুল পাহাড়ী পাঁচ মাইলের পথ অতিক্রম করতে রাত হয়ে যাবে আশংকায় তাঁকে স্মরণ পূর্বক চলতে থাকায় গন্তব্যে পৌঁছেও দেখতে পায় যে, তখনও এক দণ্ড বেলা বাকি, (২১) কবর থেকে রক্তের প্রবাহ হচ্ছে এমন দৃশ্যমান কবর আযাবও তিনি লাঘব করেন খেজুরের একটি শাখা পুঁতে দেওয়ার মাধ্যমে, (২২) স্পষ্টভাবে কলেমা পাঠান্তে কিংবা আল্লাহু যিকর রত অবস্থায় তাঁর একনিষ্ঠ মুরিদগণের ইন্তিকাল করা ইত্যাদি।

 

বিসাল শরীফ:

সুদীর্ঘ ৮৮ বছর তথা হিজরী সন মোতাবেক ৯১ বছর বয়সকাল পর্যন্ত ধর্ম-দর্শন-ত্বরীক্বার হিদায়ত কার্য আঞ্জাম দিয়ে আলোকিত বহু মানব সন্তান তৈরী করে এবং সে হিদায়ত ধারাকে গতিশীলতার শক্তিতে উজ্জীবিত রেখে ১১ রজব ১৪৩২ হিজরী, ১৪ জুন ২০১১ খ্রীষ্টাব্দ, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ বাংলা, মঙ্গলবার সুবহে সাদিকের সময় বিসাল শরীফ আলিঙ্গন করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন অর্থাৎ ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্যই এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তনকারী’।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *