হাদীয়ে যমান (রাদ্বি.)’র কারামাত
বর্ণনাকারী: উম্মুল খায়র আমাতুল জব্বার ফাত্বিমাহ
অনুলিখক: ফজিলাতুল ক্বদর নাঈমা।
ক. বক্ষ মোবারক হতে কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ:
০২/০৬/২০১১ খ্রিস্টাব্দ রোজ বৃহস্পতিবার। বাবাজানের বিসাল শরীফের বারো দিন পূর্বের ঘটনা। আমি হুজরাঃ শরীফ লাগোয়া উত্তর কামরায় ছিলাম। হঠাৎ কুরআনে করীম তিলাওয়াতের শব্দ শুনতে পাই। চতুর্দিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে বাবাজানের হুজরায় প্রবেশ করলাম। গভীর মনোযোগে লক্ষ্য করে বুঝতে পারলাম বাবাজানের বক্ষ মোবারক হতেই কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ আসছে। বাবাজান ঘুমন্ত অবস্থায় আছেন। আমি বিকাল ৪টা থেকে ৪:৩০টা পর্যন্ত কর্ণপেতে কুরআন তিলাওয়াত শুনি। এক পর্যায়ে আমার মাথা বাবাজানের বক্ষ মোবারকের সাথে লেগে গেল। তিনি তৎক্ষণাৎ বললেন, কি করছো? আমি বললাম, আপনার বক্ষ মোবারক হতে কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ শুনা যাচ্ছে।
বাবাজান বললেন, এ রূপ শুনা গেলে কখনও গায়ের সাথে লাগোনা। এখন তোমার মৃত্যুও হতে পারত। সাবধান! এ কথাও কাউকে বলোনা।
খ. আলোকময় রওযাহ শরীফের স্থান:
০৬/০৬/২০১১ খ্রিস্টাব্দ সোমবার। বিসাল শরীফের আট দিন পূর্বে বাবাজান দায়রা শরীফের বারান্দায় বসে আছেন। মাগরিবের আযান হয়ে গেলেও হুজরায় তাশরীফ আনছেন না। অন্যান্য সময় আযান হতেই তাশরীফ নিয়ে আসতেন। বিলম্ব হওয়াতে আমি টর্চ লাইট নিয়ে দেখতে গেলাম। বাবাজান দক্ষিণ মুখী হয়ে চেয়ারে বসে আছেন। আমাকে দেখে দক্ষিণের ভিটের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, ওই দেখো, আলো দেখা যাচ্ছে! আমি দেখে বললাম, কই, আমি-তো দেখছিনা। বাবাজান আবার দেখতে বললেন। তাকিয়ে দেখতেই আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। বর্তমান রওযাহ শরীফের স্থলে আমি এতো সুন্দর আলো দেখতে পাই, যা পূর্বে কখনো দেখিনি!
একই সময় পশ্চিম পার্শের রাস্তা থেকে ছোট্টদা জমির উদ্দীনও উক্ত আলো দেখতে পান বলে জানতে পারি।
গ. ইন্তিকালের পর সশরীরে দর্শন দান:
২৮/০৬/১১ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার। পাক্ষিক ফাতেহাঃ শরীফ উপলক্ষে ঘর-দোর পরিষ্কারে পুরো দিন চলে গেল। পুকুরে যখন গোসল করতে গেলাম তখন রাত বারোটা। খুব ভয় হচ্ছিল। মনে মনে ভাবছিলাম বাবাজান ইহলোকে থাকা অবস্থায় যত রাতই হতোনা কেন, তাঁর তিলাওয়াতের শব্দ শুনা যেত। কোন ধরনের ডর-ভয় লাগতোনা। আজ বাবাজান নেই ভেবে মন বিষম খারাপ হলো, প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছিল।
অমনি হুজরাঃ শরীফের দক্ষিণে মেহগনি গাছের গোড়ার দিক থেকে বাবাজানের কাশির শব্দ শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখি বাবাজান দাঁড়িয়ে আছেন। সিমেন্টের বস্তার বেষ্টনী হেতু পুকুরের ঘাট থেকে ওই জায়গাটা দেখা যেতোনা। আমি কিন্তু তখন ওই স্থানে বাবাজানকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। পুকুরে নেমে গোসল সারলাম। কাপড় বদলাতে গেলে দেখি বাবাজান আর নেই।
‘সঙ্কটকালে দাসের নেই ভাবনা
দু’ক‚লে সঙ্গে আছেন বাবা মাওলানা’।