সমাধান ঘরে না হলে-তো গড়াতে পারে হাশরের ময়দান তক

সমাধান ঘরে না হলে-তো গড়াতে পারে হাশরের ময়দান তক

✍️ বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর 

“নবুয়তের প্রথমাবস্থায় ‘রূহে হায়ওয়ানী’ ও ‘রূহে ইনছানী’ সংশ্লিষ্ট সসীম শক্তিশালী মানব রছুলুল্লাহ (দঃ) এর পক্ষে অসীম শক্তিমান ‘রুহুল কুদছের’ বা জিব্রাইল (আঃ) অথবা আল্লাহ তাআলার ‘ছিফতে জিব্রাইলী’র সহিত রূহের সংযোগ সাধন পূর্বক ‘ওয়াহি’ গ্রহণ করা মহা কষ্টসাধ্য হইয়াছিল। পরম কারুনিক আল্লাহ্ তাআলা খাছ রহমত করিয়া তাঁহার ‘লতিফা’ সমূহকে উন্মুক্ত ও প্রসারিত করিয়া ওয়াহি গ্রহণ তাঁহার পক্ষে সহজসাধ্য করতঃ তাঁহা হইতে ভারী বোঝা অপসারণ করিয়াছিলেন”।
এহেন কুফরীর প্রকাশ-প্রচারে দৃষ্টি আকর্ষণ যেখানে ফলাফল শূন্য অর্থাৎ কোন প্রকার ফুটনোট ছাড়াই দিব্যি তা প্রকাশিত-প্রচারিত, অতঃপর বিবৃতি দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেও দারুণ ব্যস্ততার জন্য প্রায় এক যুগেও তা আর দেওয়ার সময় হলনা!!! সেখানে ত্বরীক্বত, ইমামুত্ত্বরীক্বত ও ত্বরীক্বাহ’র ইমামের পর প্রথম সারির অনুসরণীয় খুলাফায়ে কিরামের মান-মর্যাদার বিষয় লক্ষ্য রাখার ফুরসৎ কৈ? কেউ ব্যস্ততার দোহাইতে এসব করে যাবেন আর কেউ তাতে আধ্যাত্মিকতা খুঁজে ফিরবেন!!! সুস্পষ্ট কুফরীতেও যে অন্তর্দৃষ্টি বুযর্গীর শোভা দেখে (ধনকুবেরের চকচকে নোটের বান্ডিল); আল্লাহর দরবারে পানাহ্ চাই, এমন অন্তর্দৃষ্টি যেন কাউকে না দেন।
“জগত রুষ্ট হলে, দুষ্ট কষ্ট দিলে, নেইকো পরোয়া;
জগতপ্রাণের তুষ্টি কাম্য, চলো পথিক লা পরোয়া”। 
                                                 – রাহী
عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : ( من رأى منكم منكرا فليغيره بيده ، فإن لم يستطع فبلسانه ، فإن لم يستطع فبقلبه ، وذلك أضعف الإيمان ) رواه مسلم .
অর্থাৎ: হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, 
“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি গর্হিত কাজ হতে দেখবে, সে যেন স্বহস্তে তা পাল্টে দেয়; যদি তা করতে না পারে, তবে আপন মুখে প্রতিবাদ জানাবে; যদি তাও না পারে, তবে অন্তরে ঘৃণা করবে; ওটিই ঈমানের দুর্বলতম অবস্থা”। হাদীসটি ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
হাদীসে বর্ণিত তিন পর্যায়ের বাইরে গেলে ঈমানের বৃত্ত লংঘিত হয়। যদিও বাইরে তার পার্থিব প্রাচুর্যের হাতছানি আর অভ্যন্তরে কারবালার প্রবাস সন্ধ্যা, তবুও একজন মু’মিনের সুযোগ নেই যে, সেই খাদ্য-রসদ ও সন্ধ্যা প্রদীপহীন তাঁবু ছেড়ে বেরুবার। এ অবস্থায় থাকতে পারাই মু’মিনদের জন্য গর্বের গৌরবের; যত পারো হাসি-ঠাট্টা করো, যতো খুশি হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে যাও, যাত্রা তাদের থামানো দমানো যাবেনা।
কেউ কর্ণপাত করুন বা নাইবা করুন, কেউ মনোযোগ দিন বা নাইবা দিন, বলেছি, বলছি, বলবো। জানি ব্যস্ত সমস্তদের মনোযোগ দেওয়ার ফুরসৎ হবেনা, حَتَّى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَ “যাবৎনা, তোমরা কবরস্থানে পৌঁছো”। কবরের নিরবচ্ছিন্ন অবসর শেষে “হাশরের ময়দানেতে দপ্তর লইয়া হাতে” যখন উঠিবেন, তখন সে দপ্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা হানির মহাপুণ্য? আর সেই পুণ্যবান ভাবনায় মত্ততার অসীম সাওয়াবও? থাকবে। সেই দপ্তরে (আমলনামায়) ত্বরীক্বত, ইমামুত্ত্বরীক্বত ও ইমামুত্ত্বরীক্বতের খুলাফায়ে কিরামের মান-মর্যাদা ভূলুণ্ঠনের অপরিমেয় পুণ্যও? থাকবে। সেই দিন নবীবর মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর লিওয়াউল হামদের নীচে, গাউসুল আ’যম মাইজভাণ্ডারীর লিওয়ায়ে আহমদীর নীচে দাঁড়িয়ে আমরাও দেখবো, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হাবীব ও হাবীবের মাহবূব সত্তাদের অবমাননার বিনিময়ে আপনাদের অন্তর্দৃষ্টি দর্শিত কোন মহাপুরস্কারে আপনাদের ভূষিত করেন। ইরশাদ হচ্ছে, ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيم অতঃপর অবশ্যই সেদিন তোমরা নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। 
عن أبى هريرة رضي الله عنه، أن النبي، صلى الله عليه وسلم، قال: (أتدرون من المفلس – قالوا : المفلس فينا من لا درهم له ولا متاع؛ فقال: المفلس من أمتي من يأتي يوم القيامة بصلاة وصيام، وزكاة؛ ويأتي وقد شتم هذا، وقذف هذا، وأكل مال هذا، وسفك دم هذا؛ وضرب هذا؛ فيعطى هذا من حسناته، وهذا من حسناته؛ فإن فنيت حسناته قبل أن يقضي ما عليه أخذ من خطاياهم فطرحت عليه ثم طرح في النار). رواه مسلم
হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা কি বুঝ যে, দেউলিয়া কে? তাঁরা বললেন, আমাদের মাঝেতো দেউলিয়া সে, যার না আছে টাকা পয়সা, না আছে সম্বল সম্পত্তি। অতএব নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমার উম্মতে দেউলিয়া সে, যে ক্বিয়মতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে আসবে, সেই সাথে নিয়ে আসবে একে গালি দিয়েছে, একে অপবাদ দিয়েছে, এর সম্পদ খেয়েছে, এর রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং একে মারধর করেছে; অতএব তার পুণ্য থেকে তাদের দিয়ে দেওয়া হবে। যদি দেনা শোধের আগে পুণ্য নিঃশেষ হয়ে যায়, তবে তাদের পাপ নিয়ে তার ওপর  নিক্ষেপ করা হবে অতঃপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। হাদীসটি ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *