যদি হারালে তুমি লাজ; তবে করতে পারো সব কাজ
✍️ বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর
যদি হারালে তুমি লাজ; তবে করতে পারো সব কাজ! উক্ত ছত্রটি হাদীসে পাকের ভাবানুবাদ।
কথায় বলে, “হাগতে লাজ নেই, দেখতে লাজ”। এ প্রবচন যদিও সঙ্গত সমালোচনার পক্ষে যুক্তি রূপে ব্যবহার্য্য, আমি কিন্তু আদর্শিক বিবেচনায় ভিন্ন অর্থে প্রয়োগ প্রয়াস পেয়েছি।
সভ্য ভব্য সমাজ! আপনি/আপনারা কি জানেন, অভিধানে হাগা শব্দটির অর্থ লিখার আগে বন্ধনীযোগে কি লিখা আছে? এক কথায় উত্তরঃ (অশোভন)।
অগত্যা শব্দটি লিখে ফেললাম বলে আমাকে কেউ অসভ্য-আদিমও ভাবতে পারেন; এতে আমার কিছু করার বা মনে করার নেই। অবশ্য বাংলায় এ শব্দের শোভন প্রতিশব্দ আমার অজানা, তাও নয়। বস্তুত আলোচ্য বিষয় কতটা লজ্জষ্কর, তার ধারণা দানেই এমন শব্দের চয়ন।
আমি কথা সাহিত্যিক না হলেও তাদের সাথে আমার ঈষৎ মিল আছে। তা হল, ধান ভানতে শিবের গীত গাওয়ার আদত!
রাস্তার ধারে মলত্যাগকারীর নিজের বা তার পক্ষে সাফাই সাক্ষীর “আমি অথবা তিনি কোন অশোভন আচরণ করিনি বা করেননি” বচনে কিছুটা লাজ লজ্জার আভাস থাকলেও কথাটা নির্জলা মিথ্যা।
অনুরূপ জনসম্মুখে দর্শকের আত্মপক্ষ সমর্থনে কিংবা তার পক্ষে অন্য কারো “সে সত্যিই উলঙ্গ হয়েছিল” উক্তিতে সত্যের আংশিক প্রকাশ থাকলেও রয়েছে স্পষ্ট নির্লজ্জতাও।
কেউ মিথ্যুক হল বলে আমাকেও নির্লজ্জ হতে হবে কিংবা কেউ নির্লজ্জ হল বলে আমাকেও মিথ্যুক হতে হবে “প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান বা বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে” সূত্রে স্বাভাবিক মনে করা হলেও আদর্শিক বিবেচনায় মোটেও সঙ্গত নয়। স্বার্থ সংরক্ষণ কিংবা অধিকার আদায়ের আরো সুন্দর সমাজ স্বীকৃত ও আইনসিদ্ধ বহু পন্থা রয়েছে। বিষয়টি উভয় পক্ষ যত শিগগির বুঝবে, ততই ভালো।
অন্ততঃ পূর্বসূরিদের মর্যাদা রক্ষার খাতিরে হলেও আল্লাহর ওয়াস্তে চুপ করো এবং চুপ করাও আপন আপন অনুগামী অনুসারীদের। আমি কারো স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টা কিংবা কারো অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে আদৌও অসমর্থন করছি না। এসব ক্ষেত্রে আমার সমর্থন অসমর্থন কোন মানেও রাখেনা; আমিও তাতে নির্লিপ্ত থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমার বিশ্বাস মতে যা কিছু পূর্বসূরিদের মর্যাদা হানিকর, তা কষ্টদায়ক। কিছু কষ্ট এমন আছে, যা নীলকন্ঠীরও হজম হয় না। আমার কিবা সাধ্য, নীরবে হজম করে যাই?
“কেউ গুরুর আদেশ লঙ্ঘন করল বলে আমারও তা মানতে মানা” বীর বাঙ্গালীর তৃতীয় হাত তথা অজুহাত হলেও মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অনেকেই লিখায় ফ্যাক্ট উল্লেখের পরামর্শ দিয়েছেন। আমি কিন্তু বরাবরই তা এড়িয়ে চলি। তার পেছনে দু’টি কারণ রয়েছে। একটি আমার উদারতা [যদিও উদারতার দাবি আমার জন্য ধৃষ্টতা], অপরটি আমার স্বার্থপরতা [যদিওবা আমি নিছক স্বার্থান্ধ নই]। উদারতা হলঃ আমি চাই না যে, কেউ চিহ্নিত বা হেয় হোক। স্বার্থপরতা হলঃ আমি চাই যে, আমার লেখা সংবাদ মাত্র না হয়ে কালোত্তীর্ণ সাহিত্য হোক, তা কালান্তরে প্রাসঙ্গিক থাকুক; এটাকে আমি আমার উচ্চাশা মনে করি, যেহেতু আমি আমার লেখার মান অবগত। আশা করি, ফ্যাক্ট উল্লেখ না করলেও সংশ্লিষ্ট মহলের বুঝতে অসুবিধা হবেনা।