কুঞ্জবন নরক হেন বন্ধুয়া বিনে

কুঞ্জবন নরক হেন বন্ধুয়া বিনে

✍️ মাওলানা নূরুল আবছার হারূনী

বিদগ্ধ-অন্তর নবী প্রেমিক হযরত সাওবান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু একদা বিদীর্ণ মন বিষণ্ন বদন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামার দরবারে উপস্থিত হলেন। তাঁর চেহারায় বিষাদের চাপ দেখে উম্মত বৎসল নবী কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। প্রেমানলে দগ্ধ মন জ্বলন্ত তন প্রেমিক বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! না আমার শরীরিক কোন রূগ্নতা আছে, না কোন দুঃখ! প্রকৃত বিষয় হল, আপনার জ্যোতির্ময় চেহারা দৃষ্টির অন্তরাল হলেই মনোপ্রাণ অস্থির হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ ছুটে এসে চেহারা দেখে মন জুড়াই। এখন এ ভাবনায় যখন তখন মন অস্থির হয়ে ওঠে যে, জান্নাতে আপনার অবস্থান কত উচ্চৈ হবে আর এ অধম কোন কোণে পড়ে রইবে! হায় আফসোস! আপনার দর্শন বিনে-তো জান্নাতের সকল নি’মত বিস্বাদ-বিফল! বিরহ-বিচ্ছেদের মর্মবিদারক বেদনা এ অক্ষম হিয়া-তো বইতে পারবেনা। উত্তর শুনে নবী করীম (দ.) নীরব হয়ে গেলেন। এমতাবস্থায় জিব্রাঈল (আ.) আল্লাহর পক্ষ থেকে শুভ সংবাদ নিয়ে এলেন যে, আমি জান্নাতে অনুগত-প্রেমিকদের বিরহ বেদনাহত নয় বরং আপন মাহবূবের সঙ্গ ও মিলনধন্য করবো। 

প্রিয় নবী (দ.)’র প্রেমে শুধু সাওবানের নয় বরং সকল সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমেরই এ দশা ছিল। তাই মুফাস্সিরীনে কিরাম উক্ত বর্ণনার সাথে এও লিখেছেন যে, সকল সাহাবা-ই কিরামের বিচ্ছেদের অনুযোগের প্রেক্ষিতে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। ইরশাদ হচ্ছে,
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَـئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاء وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَـئِكَ رَفِيقًا
“যে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে, তবে সে ওই সকল লোকের সাথে হবেন, যাদের ওপর আল্লাহ তা‘আলা অনুগ্রহ করেছেন; অর্থাৎ নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ ও সালিহগণ, আর কতই উত্তম ওই সাথী” (সূরাহ নিসা ৬৯ নম্বর আয়াত)।

রাসূলে আকরম (দ.)’র দরশন দানে আল্লাহ আমাদের ইহ-পরকালে ধন্য করুন। আল্লাহুম্মা আমীন, বিজাহি হাবীবিকা রহমতিল্লিল আলামীন, শফী‘ইল মুযনিবীন সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *