আজ উরসে পাকে গাউসে যমান আল্লামা ফরহাদাবাদী (রাদ্বি.) হারুয়ালছড়ি দরবার শরীফে
– মুক্তিধারা ডেস্ক
اے کہ تو گل گلاب ز بستان احمد،
تو آں گل کہ ز تو گلستان پدید آمد –
بہار بخش ز لطف دل خزان مارا،
یک نظر کن بر حال پریشاں خدا را –
تو آں گل کہ ز تو گلستان پدید آمد –
بہار بخش ز لطف دل خزان مارا،
یک نظر کن بر حال پریشاں خدا را –
গাউসুল আযম শাহে দু‘আলম হযরত শাহসূফী সৈয়্যদ আহমদুল্লাহ মাইজভাণ্ডারী রাদ্বিয়ানহুল্লাহুল বারী’র পবিত্র মুখে ‘আমার আমিন মিঞা’ সম্বােধনে গাউসুল আ’যম (রাদ্বি.)’র পরিবারের সদস্যভুক্ত, ‘আমার ছয়টি কেতাব হইতে একটি দিয়াছি’ মর্মে গাউসুল আযম (রাদ্বি.)’র বিশেষ জ্ঞানের ধারক-বাহক ও বিতরণকারী সত্তাই হন- গাউসে যমান, আমীনে আমনতে সুবহান, মুহাক্বিকে লাছান, শায়খুল ইসলাম, মুহসিনে আ’যম হযরতুল হাজ্জ আল্লামাহ সৈয়্যদ আমীনুল হক ফরহাদাবাদী রাদ্বিয়াহুল্লাহুল হাদী।
‘ইলম বিল্লাহ’ বা আল্লাহর সত্তা সম্বন্ধীয় জ্ঞান ‘ইলম বি-আমরিল্লাহ’ বা আল্লাহর বিধান সম্পর্কীয় জ্ঞান; উভয়বিদ জ্ঞানে তথ্য ও তত্ত্বের সম্মিলনে পরিপূর্ণ ও অদ্বিতীয় ‘মুহাক্কিক’ বা তাথ্যিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞানী ছিলেন বিধায়- অসিয়ে গাউসুল আ’যম হযরত শাহসূফী সৈয়্যদ দেলাওর হুসাইন মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ভাষায়, ‘তাঁহার কলব মােবারক সদা সর্বদা খােদার জিকিরে জাকের বা জারী থাকিত।….. তিনি নেহায়ত সাদাসিদা প্রকৃতির দীনদার কামেল মােত্তাকী আলেম ছিলেন’ প্রশংসাবাণী, ইমামে আহলে সুন্নাত আল্লামা শেরে বাংলা (ক.)’র মুখে ‘মিসলে উ হারগিয মুহাক্কিক মন নবীনম দর জাহাঁ’ বা ‘তাঁর মত তত্ত্বজ্ঞানী আমি জগতে কভু দেখিনি’ ধ্বনি এবং খলিফা-ই গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী হযরতুল আল্লামা মুহাম্মদ বজলুল করীম মন্দাকিনী (ক.)’র কণ্ঠে ‘মনগুরু কল্পতরু সর্বপূজ্য ধর্মগুরু, জ্ঞানের গগনে যেন ভাসিয়াছে পূর্ণশশী’ গীতি গীত হয়। ধর্মহীনতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির অবসানে তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ অবদান শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয়। রূমীয়ে বাঙাল আল্লামা মন্দাকিনী (রা.)’র ভাষায়- ‘সমাজে আনিলেন শান্তি, নাশি লােকের ভুল-ভ্রান্তি, রচনা করিয়ে কত ধর্মগ্রন্থ রাশি।’
সর্বজন বিদিত যে, অলিয়ুল্লাহদের অস্তিত্ব আল্লাহর অনুগ্রহই বটে। হাদীসে পাকের ভাষ্য মতে তাঁদের কল্যাণেই উম্মতে মুহাম্মদী ‘আলা সাহিবিহাস্সালাতু ওয়াস্ সালাম’র বালা-মসিবত নিবারিত, আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষিত, ভূমি হতে শষ্য অঙ্কুরিত হয়।
আল্লাহর মাহবূবীয়্যতে বরিত সত্তাদের শ্রবণ-দর্শন-চলন- কর্তৃত্বকরণ ইত্যাদি আল্লাহর কুদরত। আল্লাহর দরবারে তাঁদের চাওয়া কখনো প্রত্যাখ্যাত হয়না। বরং অতি-অবশ্যই কবুলের ঘোষণা হাদীসে কুদসীতে নবী (দ.)’র পবিত্র মুখে আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন।
আল্লাহর বন্ধুদের শত্রুতার মাধ্যমে যারা আল্লাহর সাথে শত্রুতা করে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ তা‘আলা যুদ্ধ ঘোষণা করে রেখেছেন। আল্লাহর বন্ধুদের শত্রুতা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন শান-মান সংকোচিত করা, সমালোচনা করা, অবদান অস্বীকার করা, রীতি-নীতি তথা ত্বরীক্বার বিরোধীতা করা আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতা-কর্তৃত্ব অস্বীকার ইত্যাদি।
আল্লাহর দেওয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জগতের কেউই জয়ী হতে পারেনা। যে বা যারা জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে এ চ্যালেঞ্জ নিয়েছে, সবাই লাঞ্ছিত, অপদস্থ, অপমানিত সর্বোপরি আল্লাহর ক্ষোভানলে পরকালে নরকাগ্নির উপযুক্তই হয়েছে।
আরিফ রূমী (রা.) যথার্থই বলেন, ‘হুব্বে দরবেশাঁ কলীদে জন্নাতাস্ত, দুশমনে ইশাঁ সযায়ে লা’নতাস্ত’ অর্থাৎ ‘ফকীর-দরবেশের প্রেম-ভালবাসা জন্নাতের চাবি আর তাদের শত্রুদের গ্রীবায় শোভা পায় লানত বা অভিশাপ’।
রূমী (রা.)’র উক্ত মন্তব্য কুরআন-সুন্নাহর দলীলে বলিষ্টই বটে। পরন্তু বাস্তব জীবনের হাজারো ঘটনায় ওই প্রমাণ আরো শক্তিশালীরূপে সত্যায়িত।
রাসূলে কারীম রাউফুর রাহীম আলায়হি আফদ্বালুস্ সালাওয়াতি ওয়াত্তাসলীম’র ঘােষণা: ‘মাঁল্ লা ইয়াশকুরুন্নাসা লা- ইয়াশকুরুল্লাহ’ অর্থাৎ ‘যে মানুষের (উপকারের) কৃতজ্ঞতা করেনা, সে আল্লাহর (অনুগ্রহেরও) কৃতজ্ঞতা করেনা।’ এতে সুস্পষ্ট যে, বান্দার ঋণের স্বীকৃতিমূলক কৃতজ্ঞতা বর্জন করে, আল্লাহর অনুগ্রহের শােকরিয়া আদায় করা হলেও, তা কবূল হয়না। চূড়ান্তরূপে বলতে গেলে, বান্দার অকৃতজ্ঞতা, আল্লাহরই অকৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতায় প্রভু অনুগ্রহের প্রবৃদ্ধি আর অকৃতজ্ঞায় গুরুদণ্ডের ঘােষণা পাক কুরআনের সূরা ইব্রাহীম ৭নং আয়াতে নিশ্চয়তাযোগে বিবৃত। সুতরাং উপকারকারীর স্বার্থে নয়, বরং নিজেদের হিতার্থেই আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া জরুরি।
আজ মহান ২৬ অগ্রহায়ণ ১১ ডিসেম্বর শনিবার হারুয়ালছড়ি দরবার শরীফে ব্যাপক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেই মহান মুহসিন, ইমাম আ’যমে যমান আল্লামা ফরহাদাবাদী (রাদ্বি.)’র ৭৭তম উরসে পাক।
আমাদের মুর্শিদে করীম খলিফা-এ আল্লামা ফরহাদাবাদী (রাদ্বি.) হাদী-এ যমান গাউসুল ওয়াক্ত আল্লামা কাযী সৈয়্যদ মাওলানা হারুনুর রশীদ (রাদ্বি.)’র সূচিত ধারায় ২৬ অগ্রহায়ণ হারুয়ালছড়ি দরবার শরীফে উরসে পাকে ফরহাদাবাদী (রাদ্বি.) অনুষ্ঠান এবং ২৭ অগ্রহায়ণ ফরহাদাবাদ দরবার শরীফে যােগদান অব্যাহত রাখতে আমরা পূর্ণ সচেষ্ট।
উরসে পাকে গাউসে যমান আল্লামা ফরহাদাবাদী (রাদ্বি.) ২০২১ খ্রীষ্টাব্দ উপলক্ষে হারুয়ালছড়ি দরবার শরীফের উদ্যোগে গৃহীত সমূহ কর্মসূচী বাস্তবায়নে সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা আর সকল দৈন্যতা মােচন করে আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্টা কবূল করুন। আমীন- বিহুরমতি সৈয়্যদিল মুরসালীন ওয়া বিইযতি গাউসিল আলামীন ওয়া বিজাহি শায়খিল ইসলামি ওয়াল মুসলিমীন ও বিবরক্বাতি মুর্শিদিনাল করীম ।