মুরশিদে করীম হাদীয়ে যমান গাউসুল ওয়াক্ত রাদ্বিয়ানহুল্লাহুল বারীর তাক্বরীর

চলিত ভাষায় রূপান্তর : মঈনুদ্দীন মুহাম্মদ মামুনুর রশীদ
 
[বি. দ্র.: ১৯৮৭ সনের ১২ রবিউল আওয়াল আঞ্জুমানে তৌহীদ বতোফায়লে রশীদের উদ্যেগে হারুয়ালছড়ি গাউসিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত জশনে জুলূসে ঈদে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা’আলা  আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাহফিলে সভাপতির ভাষণে প্রদত্ত ত্বাকরীরের চুম্বকাংশ]
পর্ব-৩ [মানব সৃষ্টির কারন]
পিয়ারে মুসলমানো! আমার আলোচনা ওই দিকে নয়, আমি এ কথা বলতে চেয়েছিলাম, আল্লাহ আমাদের বানিয়েছে, তাঁকে চেনার জন্য-পাওয়ার জন্য। আল্লাহকে কীরূপে চেনা যাবে? হাদীসে পাকে ইরশাদ হচ্ছে, ‘মান আরাফা নফসাহু ফাক্বাদ আরাফা রব্বাহু’ যে নিজেকে চিনেছে, সে তাঁর রবকে চিনেছে। আত্মপরিচয় লাভ হলে খোদার পরিচয় লাভ হবে। খোদাকে পাওয়ার আলোচনা পরে আসছে। আল্লাহ আমাদেরকে ইসমে মুহাম্মদের আকৃতিতে গঠন করে জন্নাত হতে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘লাক্বাদ খালাকনাল ইনসানা ফী-আহসানি তাক্বভীম, ছুম্মা রাদাদনাহু আসফালা সাফিলীন’ অর্থাৎ আমি মানুষকে সর্বোৎকৃষ্ট আকৃতিতে সৃজন করেছি। অতঃপর সর্বনিম্নস্তরে অবনমিত করে দিয়েছি’।(সূরা ত্বীন ৪-৫ নং আয়াত) এ জগতে প্রেরণের পূর্বে এখানে-ওখানে ও বেহেশতে রেখেছেন। এগুলো আল্লাহর হিকমত-কুদরত-বাহানা; আমরা বুঝবনা। রাসূলুল্লাহ (দ.) ইরশাদ করেন, হযরত আদম ও মূসা আলায়হিমাসসালাম বিতর্কে লিপ্ত হলেন। অতএব মূসা (আ.) আদম (আ.) কে বললেন, আপনি ওই আদম, যাকে আপনার ভুল জান্নাত হতে বের করে দিয়েছে! আদম (আ.) তাঁকে বল্লেন, আপনি ওই মূসা, যাকে আল্লাহ আপন রিসালত ও কালাম দ্বারা মনোনীত করেছেন; অতঃপর আপনি আমাকে এমন বিষয়ে ভর্ৎসনা করছেন, যা আমার সৃষ্টির পূর্বে নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার বর্ণনাত্তোর রাসূলুল্লাহ (দ.) বলেন, আদম (আ.) বিতর্কে মূসার ওপর দু’বার বিজয়ী হন। (বুখারী শরীফ, ১ম খণ্ড ৪৮৪ পৃষ্ঠা)
পিয়ারে মুসলমানো! ‘আদ্দুনিয়াউ মাযরা‘আতুল আখিরাতি’ দুনিয়া আখিরাতের কৃষিক্ষেত-খামার। এ জমিনে এসেছি বা আমাদের পাঠিয়েছে চাষাবাদ-ব্যবসা-বাণিজ্য-তিজারত করার জন্য। কোন ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে? ব্যবসা লাভজনক হতে হবে। আমরা এখানে প্রবাসী, এখানে আমাদের ঘর-বাড়ি নয়। আমরা আর্শের পাক পাখি ছিলাম।
‘আর্শের পাক পাখি ছিলি ভবে আসি পেঁচা হলি
নিজ মান হারাইলি করি ধূলে গড়াগড়ি।
পাকা ঝাড় ধূলা ছাড় পরিষ্কার হও একবার
আর্শের কাঙ্গুরা পরে চল এবে মাটি ছাড়ি’।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *