সৈয়্যিদুশ শুহাদা-ই সৈয়্যিদুনা ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু [পর্ব – দুই]

সৈয়্যিদুশ শুহাদা-ই সৈয়্যিদুনা ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু
[পর্ব – দুই]
🖊আল্লামা বোরহান উদ্দিন মুহাম্মদ শফিউল বশর    
ٹوٹے ہوئے  دلوں كا سہارا حسین ہے
ڈوبے نہ جو فلک پہ وہ تارا حسین ہے
اہل خرد سمجھ نہ سکے کیا حسین ہے
نانا کے جسم پاک کا سایہ حسین ہے
ایمان اور کفر میں نسبت کوئی نہیں
دنیا ہے رات اور سویرا حسین ہے 
یہ بھی تمہیں خیال نہ آیا یزیدیو!
سرکار دو جہاں کا نواسہ حسین ہے
ہو کر شہید‘ زندگیئ جاوداں  ملی
زندہ تھا اور آج بھی زندہ حسین ہے
بیعت نہ کی قبول مگر‘ سرکٹا دیا 
ايسا جہاں ميں كون ہے جيسا حسين ہے
جنّت کا پھول سیّد کونین کے لئے
اور فاطمہ کی آنکھ کا تارا حسین ہے
بزم رسول پاک میں دیکھا ہے رازنے
سرکار ہیں چراغ اجالا حسین ہے
টুটে হূয়ে দিলোঁ কা ছাহারা হুসাইন হ্যায়
ডুবে নাঃ জূ ফলক পেঃ ওয়ে তারা হুসাইন হ্যায়।
আহলে খিরাদ সমঝ নাঃ সকে কিয়া হুসাইন হ্যায়
নানাকে জিসমে পাক কা ছায়া হুসাইন হ্যায়।
ঈমান আওর কুফর ম্যাঁয় নিসবত কুঈ নেহীঁ
দুনিয়া হ্যায় রাত আওর সভীরা হুসাইন হ্যায়।
ইয়ে ভী তুমহীঁ খিয়াল নাঃ আয়া এযীদীয়ো!
সরকারে দূজাহাঁ কা নাওয়াসাঃ হুসাইন হ্যায়।
হূ কর  শহীদ জিন্দেগীয়ে জাভেদাঁ মিলী
যিন্দাঃ থা আওর আজভী যিন্দাহ হুসাইন হ্যায়।
বায়‘আত নাঃ কী ক্ববূল মগর সর কাটা দিয়া
এসা জাহাঁ ম্যায় কোন হ্যায় জেয়ছা হুসাইন হ্যায়।
জন্নাত কা ফুল সৈয়্যদে কাউনাইন কে লিয়ে
আওর ফাত্বিমাহ কী আঁখ কা তারা হুসাইন হ্যায়।
বয্মে রসূলে পাক ম্যাঁয় দেখা হ্যায় রায নে
সরকার হ্যায়ঁ চেরাগ উজালা হুসাইন হ্যায়।
-রায এলাহাবাদী
উত্তম আরোহী: হযরত উমর ইবনুল খাত্ত্বাব (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হাসান ও হুসাইন (রা.)কে দেখলাম যে, নবী করীম (দ.)’র দু’কাঁদে সওয়ার। অতএব আমি বললাম, কতই উত্তম সওয়ারী তোমাদের নীচে! এতে রাসূলুল্লাহ (দ.) বললেন, সওয়ারদ্বয়ও কত উত্তম! (মাজমাউল যাওয়ায়িদ ৯ম খণ্ড ১৮২ পৃষ্ঠা)।
শাবক হাদিয়াহ নিয়ে মা হরিণ: এক মরুচারী প্রিয় নবী (দ.)’র খেদমতে একটি হরিণ শাবক হাদিয়াহ দিলেন। এমন সময় ইমাম হাসান (রা.) নানাজানের দরবারে এলেন। তিনি (দ.) তাঁকে ওই হরিণ শাবক দিয়েছিলেন। এতদদর্শনে ইমাম হুসাইন (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন, ভাইজান! এটি কোত্থেকে এনেছেন? প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন, নানাজান দিয়েছেন। ইমাম হুসাইন (রা.)ও হরিণ শাবকের জন্য খিদমতে উপস্থিত হয়ে জেদ করতে লাগলেন, তিনি (দ.) মন ভুলানো অনেক কথা বললেন, কিন্তু হুসাইনের হরিণ শাবকই চায়। একপর্যায়ে তাঁর চোখে জল আসার উপক্রম হলে হঠাৎ সশাবক এক মা হরিণী এসে রাসূলুল্লাহ (দ.)’র খিদমতে আবেদন জানাল, সরকার! আমার এক বাচ্চা মরুচারী খেদমতে পেশ করে দিয়েছেন, অন্য শাবকটি আল্লাহর নির্দেশে হুসাইনের জন্য নিয়ে এসেছি; তাঁর যে হরিণ ছানা চায়। যদি হুসাইনের আঁখি হতে একবিন্দু অশ্রুও গড়িয়ে পড়তো, তবে মর্যাদাবান আর্শী ফিরিশতাদের অন্তর কম্পিত হয়ে যেত। (রাওদাতুশ শুহাদা- দ্বিতীয় খণ্ড ২৬ পৃষ্ঠা)
অশ্রু প্লাবিত আঁখি: শাহাদাতে হুসাইনের সংবাদ নিয়ে জিব্রাইল ও অন্যান্য ফিরিশতারা প্রিয় নবী (দ.)’র খিদমতে বারবার এসেছেন। এ সংবাদে রাসূলুল্লাহ (দ.)’র দু’নয়ন বরাবর অশ্রুপ্লাবিত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় কয়েকটি বর্ণনা আলোচিত হল।
ক. উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামাহ (রা.) বর্ণনা করেন, একদা নবী করীম (দ.)’র দু’চোখ হতে আঝোরে অশ্রু ঝরছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কেন কাঁদছেন? নবী করীম (দ.) উত্তর দিলেন, আমাকে জিব্রাইল এই মাত্র খবর দিলেন যে, আপনার উম্মত আপনার এ বেটাকে (হুসাইনকে) কারবালা নামক স্থানে হত্যা করবে। (আল্ মু’জামুল কবীর তৃতীয় খণ্ড ১০৯ পৃষ্ঠা)
খ. মাওলাল মু’মিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন আসাদুল্লাহিল আলীয়্যিল আ’যীম আলী
কাররামাল্লাহু ওয়াজ্হাহুল করীম বর্ণনা করেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহ (দ.)’র গৃহে প্রবেশ করি, এমতাবস্থায় তিনি (দ.) কাঁদছিলেন। অতএব আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে কাঁদিয়ে দিল কিসে? তিনি (দ.) বললেন, এই মাত্র জিব্রাইল আমার নিকট ছিলেন। তিনি সংবাদ দিলেন যে, নিশ্চয় আমার বেটা হুসাইন ফুরাতের কিনারে কারবালা নামক স্থানে শহীদ হবেন। জিব্রাঈল ওই যায়গার এক মুষ্টি মাটি নিয়ে আমাকে শুঁকিয়ে দিয়েছেন। অতএব আমি আমার দু’নয়নে অশ্রু বর্ষণে রুখতে পারিনি। (আতত্বাবাকাতুল কুবরা লিল ইমাম মুহাম্মদিবনি সা’দ এর উদ্ধৃতিতে আসসাওয়ায়িকুল মুহরিক্বাহ ১৯৩ পৃষ্ঠা)
গ. উম্মুল ফদ্বল লুবাবাহ বিনতে হারিস বর্ণনা করেন, একদা আমি হুসাইনকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (দ.)’র কোলে দিলাম। হঠাৎ আমি দেখতে পেলাম নবী করীম (দ.)’র দু’চোখ হতে টপটপ করে অশ্রু ঝরছে। বললাম, আমার মা-বাবা আপনার ওপর উৎসর্গ, আপনার কি হয়েছে? হে নবীয়াল্লাহ! বললেন, আমার নিকট জিব্রাঈল এসে সংবাদ দিলেন যে, অচিরেই আমার উম্মত আমার এ বেটাকে হত্যা করবে। আমি হুসাইনের দিকে ইঙ্গিত করে সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করলাম, এ বেটাকে? বললেন, হ্যাঁ; তিনি ওই স্থানের কিছু লাল মাটিও আমাকে দিয়েছেন। (মিরাতুল মানাজীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ)
অশ্রু প্লাবন: হযরত আলী (রা.) সিফফিন গমনকালে কারবালা হয়ে যাওয়ার সময় সেখানে দাঁড়িয়ে পড়লেন। জিজ্ঞাসা করলেন, এ যায়গার নাম কি? বলা হল, কারবালা। এতদশ্রবণে তিনি কাঁদতে লাগলেন; এমনকি তাঁর অশ্রুতে মাটি ভিজে গেল। অতঃপর প্রিয় নবী (দ.) প্রদত্ত পূর্বোক্ত সংবাদ বর্ণনা করেন। (আসসাওয়ায়িকুল মুহরিক্বাহ ১৯৩ পৃষ্ঠা)
হযরত আলী (রা.) হুসাইনের ক্ববর হওয়ার স্থানটি দিয়ে গমনকালে বলেন, এটি তাদের বাহন বাঁধার স্থান, এখানে তাঁদের তাবু হবে, এটি তাঁদের রক্তপ্রবাহস্থল; এখানে নবী (দ.)’র পরিবারের কতেক যুবকদের হত্যা করা হবে! তাঁদের জন্য আসমান যমিন কাঁদবে! (পূর্বোক্ত ১৯৩ পৃষ্ঠা)
রাসূলুল্লাহ (দ.)’র অশ্রুপাতের ঘটনা শুধু শাহাদতে হুসাইনের পূর্বাভাষ সংশ্লিষ্টতার নয়, কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার পরও ঘটেছে। উম্মুল মু’মিনীন উম্মে সালামাহ (রা.) রাসূলুল্লাহ (দ.)কে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখতে পান; তাঁর শির মুবারক ও দাঁড়ি মুবারকে মাটি লেগে আছে। তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ (দ.) বলেন, এই মাত্র হুসাইন শহীদ হয়েছে। (প্রাগুক্ত ১৯৩ পৃষ্ঠা)।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *